সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত

» ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ

» আমার দেশ সম্পাদকের রত্নগর্ভা মাতা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগমের মাগফিরাত কামনায় ফেনীতে দোয়া

» গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন 

» ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস

» জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন

» ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন

» ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’

» ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল

» ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”

» ফরহাদনগরে ছাত্রদল নেতা জিয়া উদ্দিনের ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পথে ঘুরছে বৃদ্ধা দুই অসহায় বোন

» বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটির পরিচিতি ও শিক্ষার মানোন্নয়নে সভা

» ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ

» ফেনীতে জলবায়ু পরিবর্তন ও সচেতনতা বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

» উত্তর চন্ডিপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি এম. আনোয়ারুল ইসলাম

» স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বাবুর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া ও মিলাদ

» বাম গণতান্ত্রিক জোটের ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের রোডমার্চ ফেনী ছাড়লো- দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত 

» সাপ্তাহিক ফেনী সংবাদ এর প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

» ফেনীতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভে বক্তারা বলেন- মুসলিম ভূখণ্ডে হামলা করে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করা অসম্ভব

» ফেনী জেলা যুবদলের ৫১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা

সম্পাদক: শওকত মাহমুদ
মোবাইল: ০১৮১৩-২৯২৮৩৫
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মোজাম্মেল হক মিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: শাহজালাল ভূঁঞা
মোবাইল: ০১৭১৭-৪২২৪৩৫, ০১৮১৯-৬১৩০০৫

সহ-সম্পাদক: শেখ আশিকুন্নবী সজীব
মোবাইল: ০১৮৪০-৪৪৪৩৩৩
সম্পাদকীয় ও বার্তা কার্যালয়: শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতান(৬ষ্ঠ তলা), স্টেশন রোড, ফেনী-৩৯০০।
ই-মেইল: ajeyobangla@gmail.com

Desing & Developed BY GS Technology Ltd
১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,২৭শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সময়ের সাথে পাল্টাচ্ছে ঈদ আনন্দ

বখতেয়ার মুন্না :
সত্তর দশকের কথা। ঈদ। উফ্ সে তো অফুরন্ত আনন্দ। কেমন ছিল সেকালের ঈদ ? সেকাল তো একালের বড়দের শৈশব কাল। শৈশবের স্মৃতি মানুষকে এমনিতেই আবেগতাড়িত করে। তার উপর আবার ঈদের স্মৃতি। সে কি ভুলা যায়! আমি তখন প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের শিক্ষার্থী। ঈদ সে তো মাস গড়ালে। তবে না, প্রথম রোজা থেকেই শুরু হতো ঈদ প্রস্তুতি। ঘরে ঘরে শুরু হতো চুট্কি পিঠা, চালের গুড়ার সেমাই, নারিকেলের চিড়াসহ নানা ধরণের শুকনো পিঠা বানানোর কাজ। আর এতে পরিবারের কমবেশি সবাই সামিল হতো।

তখনকার দিনে এখনকার মত রেডিমেড গার্মেন্টস ছিল না। তখন থান কাপড় কিনে পোষাক বানাতে হতো। রোজার প্রথম থেকে ভীড় শুরু হয়ে যেত খলিফা (টেইলর) বাড়ীতে। আবার কাপড় যখন তখন কেনা যেতো না। কারণ হাট বারে হাট ছাড়া কাপড় পাওয়া যেতো না। অবশ্য ফেনী বাজারে সবসময় পাওয়া যেত। যাই হোক খলিফা বাড়ীতে কাপড় বানাতে গিয়ে ছোটদের আর তর সয়না। মাঝে মধ্যেই ঢু মেরে আসে খলিফা বাড়ীতে। তারটা বানাতে আর কত দেরী। কার কার পোষাক বানানো হলো এই সব তথ্য সংগ্রহের জন্য। এই আনাগোনা ও অপেক্ষা ছিল কতইনা মধুর। অবশেষে ঈদের দুই একদিন আগে পেয়ে যেত তার কাংখিত পোষাকটি। নতুন পোষাক পেয়ে তার ঈদ হয়ে যেত রঙ্গীন। ঈদের দিন সকাল বেলা ছোট বড় সকলে দল বেঁধে পুকুরে বা নদীতে গোসল করা। তারপর নতুন পোষাক পরে পায়েস সেমাই খেয়ে সারিবদ্ধভাবে ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে যাওয়া। মনে হয় পথে পথে সাদা পাজামা পাঞ্জাবী টুপি পরিহিত মানুষের মিছিল মিলিত হয়েছে কোন এক মোহনায়।

তখন গ্রামে গ্রামে ঈদগাহ মাঠ ছিল না। কয়েকটি গ্রামের জন্য ছিল একটি ঈদগাহ মাঠ। গ্রামে গ্রামে ঈদগাহ এর প্রয়োজনীয়তাও মনে করতো না। কারন এই উপলক্ষে ঈদগাহে কয়েকটি গ্রামের লোক একসাথে মিলিত হতে পারতো। নামাজ শেষে পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করে চলতো কুশল বিনিময়। ঈদগাকে ঘিরে বসতো গ্রাামীণ মেলা। চারিদিকে শুধু প্যাঁ পুঁ ভোঁ ভোঁ বাশিঁর আওয়াজ। ঈদগাহ থেকে ফেরার পর প্রতিবেশীদের বাড়ী বাড়ী যাওয়া, মিষ্টি মুখ করা। ছোটরা নতুন জামা কাপড় পড়ে দল ধরে এ বাড়ী সে বাড়ী বেড়াতে বের হত। তাদের তো দশ/বার বাড়ীতে না যেতে পারলে যেন ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ হতো না। কোন কোন আত্মীয়-স্বজন ছোটদেরকে নতুন দুই টাকা/পাঁচ টাকা ঈদের সালামী দিতোই। এই সালামী পেয়ে নিজেদেরকে অনেক সম্পদশালী মনে হতো। এই মূল্যবান সম্পদ আমরা অনেকদিন আগলে রাখতাম। নতুন টাকার গরম অনেক দিন থাকতো। আগের দিনে অনেক এলাকায় গ্রামের লোকজন সাধারণত গরিবদের ফেতরার টাকা না দিয়ে সমপরিমান খাবার চাউল দিতো। ঈদের দিন সকাল বেলা ঈদের নামায পড়তে যাওয়ার সময় পোটলা বেঁধে চাউল সাথে করে নিয়ে যেতো। ঈদগাহ মাঠের চারপাশে ভিখিরী ও গরীব লোকজন এই চাউল নেয়ার জন্য কাপড় বিছিয়ে রাখতো। লোকজন নামাযের পূর্বে সাথে আনা চাউল ওই কাপড়ের উপর ছিটিয়ে দিতো। ছোটরা এই কাজটি করতে খুব আনন্দ পেত। অবশ্য শহরে টাকাই দেয়া হতো।

তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি ও স্যাটেলাইট টিভির প্রভাবে বর্তমানে ঈদ উদযাপনের পদ্ধতি এখন পুরাই পাল্টে গেছে। আগে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ঈদ কার্ড প্রেরণ বেশ জনপ্রিয় ছিল। বর্তমানে অফিস ও কর্পোরেট জগতে এর প্রচলন থাকলেও ব্যক্তি পর্যায়ে তেমন একটা নেই। এখন ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয় ফেসবুক, ভাইবার, টুইটার, ইমেইল বা মোবাইলের এসএমএস বা এমএমএস এর মাধ্যমে। ঈদের আনন্দ আবর্তিত হয় ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটি পারলার, ও শপিংকে কেন্দ্র করে। কেনা কাটাই যেন এখন ঈদের মূল আনন্দ। তাও আবার ঘরে বসে অনলাইন মার্কেটিং। তরুণ তরুনীরা নিজেকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য রমজানের মাঝামাঝি সময় থেকেই বিউটি পারলারগুলোতে ভীড় বাড়তে থাকে। ফ্যাশন হাউসগুলো জমজমাট হয়ে উঠে। কিশোরী-তরুনীর হাতে মেহেদী লাগনো সেকাল-একাল দুই কালেই খুব জনপ্রিয়। মনে হয় তাদের হাতে আনন্দ যেন মূর্ত হয়ে উঠে। আনন্দ যেন হাতের মুঠোয় থাকে। তবে এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিভিন্ন রংয়ের মেহেদী রেডিমেড পাওয়া যায়, হাতে লাগানোর সহজ উপায় আছে। কিন্তু সেকালে গাছের মেহেদী লাগানো ছিল অনেক কষ্টকর। তখন এই কষ্টকর কাজটিই ছিল ঈদ আনন্দের প্রধান আকর্ষন। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সংগ্রহ করা হতো মেহেদী-বা মেন্দির পাতা। তারপর রাতে একজন শিল-পাটা নিয়ে মেন্দি বাটতে বসতো। আর তাকে ঘিরে চারিদিকে গোল হয়ে বাকীরা বসতো। চলতো গল্পগুজব, হাসি ঠাট্টা-গান। মেহেদী প্রস্তুত হলে একটি ছোট কাঠিঁ দিয়ে হাতে মেহেদীর নকশা আঁকা হতো বা চুন দিয়ে নকশা একে হাতের তালুতে মেহেদী ছাপ মেরে রাখা হতো। পরে দেখা যেত হাত লাল-সাদা নকঁশা হয়েছে। নিজের, চাচাতো-ফুফাতো, প্রতিবেশী ভাই-বোনদের সাথে মেহেদী লাগানোর সেই সময়টুকু যে কি মধুর ছিল!

খাওয়ার কথা সে আর কি বলবো। আগে রোজার ঈদে খাওয়ার মেনুতে সেমাই, পায়েস, ফিরন্নি, পিঠাসহ নানা রঙের ঢংএর ও স্বাদের মিষ্টি জাতের খাদ্যের সমাহার ছিল। সময় গড়ানোর সাথে সাথে মানুষের রুচিবোধও পাল্টে গেছে। ঈদের দিন এখন খাওয়ার টেবিলগুলোর বেশির ভাগ জায়গাটা দখল করে নিয়েছে ঝালসহ নানা স্বাদের বিদেশী যতসব খাওয়ার।

কিন্তু যে ঈদের জন্য এত আয়োজন সেই ঈদের দিনে কি আগের দিনের মত আনন্দ হয় ? ঈদের দিনে দল ধরে প্রতিবেশীদের বাড়ী বেড়ানো-গ্রামে কিছুটা থাকলেও শহরে এখন নেই বললেই চলে। সারাদিন অলস সময় কাটানোর পর বিকেলে বা সন্ধ্যায় শিশু পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক বা আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়াতে বের হয় কেউ কেউ। ঈদের মাঠের আনন্দও সীমিত হয়ে গেছে। শহরে তো ঈদের নামাজ ও শুক্রবারের জুম্মার নামাযের পার্থক্যই বুঝা যায় না। কারণ মসজিদেই হয় ঈদের জামাত। কোলাকুলি করার জায়গা নেই। বড় ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়ে ক’জনে ?

অবশ্য এখন ঈদের আনন্দ দিতে বা ঈদ আনন্দকে ঘরে বন্দী করতে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো। সপ্তাহব্যাপি প্রচারিত হয় ঈদ অনুষ্ঠান। ব্যস্ত শহর, ব্যস্ত মানুষের জন্য এই আনন্দই বা কম কি।

ঈদের অনুষ্ঠান বা আনুষ্ঠানিকতা যাই থাকুক না কেন, ঈদের আনন্দ থাকে প্রতিটি মসুলমানের হৃদয়ে, ধর্মীয় অনুভূতিতে। এই আনন্দে ছোট-বড়, ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একাকার হয়ে যায়। এটাই ঈদের বড় মহিমা।

নিজেকে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় জড়িয়ে লেখালেখিতে এখন অনেকটাই অনভ্যস্থ হয়ে পড়েছি। তারপরও দৈনিক অজেয় বাংলা পত্রিকার ঈদ ম্যাগাজিনে প্রকাশের জন্য তাদের উপর্যপুরি অনুরোধের কাছে নিজ লজ্জায় হার মানতে বাধ্য হতে হয়েছি। প্রিয় পাঠক অনেকদিন পর আমার এ লেখা আপনাদের কতটুকু আবেগ তাড়িত করতে পেরেছে জানিনা। তবে আমি আমার শৈশবের সাথে পড়ন্ত বেলার ঈদ আনন্দ শেয়ার করলাম। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

#লেখক : ফেনী ব্যুরো প্রধান, সময় টেলিভিশন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



সম্পাদক: শওকত মাহমুদ
মোবাইল: ০১৮১৩-২৯২৮৩৫
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মোজাম্মেল হক মিন্টু
নির্বাহী সম্পাদক: শাহজালাল ভূঁঞা
মোবাইল: ০১৭১৭-৪২২৪৩৫, ০১৮১৯-৬১৩০০৫

সহ-সম্পাদক: শেখ আশিকুন্নবী সজীব
মোবাইল: ০১৮৪০-৪৪৪৩৩৩
সম্পাদকীয় ও বার্তা কার্যালয়: শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপনী বিতান(৬ষ্ঠ তলা), স্টেশন রোড, ফেনী-৩৯০০।
ই-মেইল: ajeyobangla@gmail.com

Design & Developed BY GS Technology Ltd

error: Content is protected !!